পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

৩৯। দি ট্রাভেলস অফ আ হিন্দু ৩ ভোলানাথ চন্দ্র


সেকালের বাঙালিদের ভ্রমণ                ধারাবাহিক 


                   -------  সুমনা দাম



                 (আগের পর্বের পরে)

জলঙ্গি নদীপথে এর পরের গন্তব্য কৃষ্ণনগর। জমিদার কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের নামে কৃষ্ণনগরের নামকরণ করা হয়েছে। তিনি গত শতাব্দীর (অষ্টাদশ শতাব্দীর) শেষ জমিদার, যিনি অর্থ ব্যয় করে কিছু মূল্যবান কীর্তি রেখে গেছেন। তিনি শিক্ষিত ছিলেন এবং শিক্ষা ও গুণের কদর করতেন। তাঁর সভায় ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর ( বিদ্যাসুন্দর কাব্যের রচয়িতা) সভাকবি ছিলেন। লেখক দেখেন কৃষ্ণচন্দ্রের প্রাসাদ তখন ভগ্নপ্রায় অবস্থায় আছে। রাজবাড়ির নিকটে অবস্থিত কালীবাড়িতে ভারতচন্দ্রের থাকার ঘরও দেখেন লেখক। 


লেখকের পরবর্তী ভ্রমণ শুরু হয় ১৮৪৬ এর ২৩ শে আগস্ট। নদীয়ার অগ্রদ্বীপ হয়ে লেখক এলেন কাটোয়ায়। অষ্টাদশ শতকের ভূগোলবিদ জেমস রেনেলের মানচিত্র (বাংলার সর্ব প্রথম ম্যাপ) অনুসারে অগ্রদ্বীপ গঙ্গার বাম পাড়ে ছিল কিন্তু এখন সেটা আছে ডান দিকে। অগ্রদ্বীপে এপ্রিল মাসে বার্ষিক মেলা হয়। সেখানে গোপীনাথ মূর্তি দর্শনে এবং ঘোষ ঠাকুরের শ্রাদ্ধ (ঠাকুর গোপীনাথ নিজে গোবিন্দ ঘোষের শ্রাদ্ধ করেন বলে প্রচলিত আছে) দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। বৃন্দাবনের যেমন আগ্রা বা অগ্রবন, নদীয়ার সেরকম অগ্রদ্বীপ বলে লেখক মন্তব্য করেছেন। 


কাটোয়া হল সুপ্রাচীন গ্রীক ঐতিহাসিক আরিয়ানের লেখায় পাওয়া 'কাটাডুপা' নামক স্থান। আগে নিশ্চয়ই নবদ্বীপ, অগ্রদ্বীপে সত্যিই দ্বীপ ছিল। কাটোয়া আগে মুর্শিদাবাদের সামরিক ঘাঁটি ছিল।  নবাব মুর্শিদকুলি খান এখানে পথিকদের সুবিধার জন্য প্রহরার ব্যবস্থা করেছিলেন। চোর ধরা পড়লে তার শরীর দুইভাগ করে রাস্তায় গাছে ঝুলিয়ে রাখা হতো। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ থেকে কাটোয়ায় মারাঠা আক্রমণ শুরু হয়। মানুষ শহর, গ্রাম ছেড়ে পালায়। ফলে এই এলাকা জঙ্গলে পরিণত হয় ক্রমে। এখান দিয়ে পথিকের যাতায়াত খুব কষ্টকর ছিল বাঘ ও বুনো শুয়োরের উপদ্রবের কারণে। বৈষ্ণবদের কাছে কাটোয়ার গুরুত্ব অনেক, কারণ চৈতন্যদেবের গৃহত্যাগ করে কাটোয়ায় এসে কেশব ভারতীর কাছে সন্ন্যাস নিয়েছিলেন। পলাশীর যুদ্ধের আগে রবার্ট ক্লাইভ ১৭৫৬ -তে পলাশী যাওয়ার আগে এখানে থেমেছিলেন। কাটোয়াতে নাকি তিনি নির্জন আম বাগানে ধ্যান করেছিলেন। কাটোয়ার বাণিজ্য কেন্দ্র হল অজয় আর ভাগীরথীর সঙ্গমস্থল। সেখানে সব দোকান, গুদাম আছে। এখানে সুতি আর সিল্কের কাপড় ভালো পাওয়া যায়। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ বৈষ্ণব। আলীবর্দী খাঁর দুর্গ (যেখান থেকে তিনি মারাঠাদের পরাজিত করেছিলেন) এখানে ছিল। সেই মাটির তৈরি দুর্গটির আধ মাইল পরিসীমা, ১৪ টি কামান দেওয়ালে গাঁথা। পলাশীর যুদ্ধের সময় ইংরেজ এই দুর্গ বিনষ্ট করে। 


পলাশী কাটোয়া থেকে ১৬ মাইল দূরে অবস্থিত। যুদ্ধক্ষেত্রটি আর নেই, গঙ্গার তলায় চলে গেছে। 


লেখক অজয় নদীতে নৌভ্রমণে গেলেন। এই নদী পাহাড়ি, এতে হড়পা বান আসে পাহাড়ে বৃষ্টি হলে। তখন প্রচন্ড স্রোত ভীষণ শব্দে আশেপাশের মানুষ গবাদি পশু সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অজয় শব্দের অর্থ যাকে হারানো যায় না। পূর্বে অনেক হিন্দু মা তার সন্তানকে অজয়ের জলে স্নান করিয়ে অজেয় তৈরি করতে চাইতেন। হয়তো এই কারণে জেলার নাম বীরভূম। আগে একে মল্লভূমি-ও বলা হতো অর্থাৎ মল্লদের ভূমি। গ্রীক পর্যটক যিনি ২৮৮ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে ভারতে এসেছিলেন সেই মেগাস্থিনিসের ভাষায় অজয় নদী হলো 'অ্যামিষ্টিস'। অজয় নদীর দুই ধারের সৌন্দর্য অপরিসীম। ঢেউ খেলানো জমি, সুন্দর পরিচ্ছন্ন গ্রাম, আমগাছের বাগান, পুকুর নিয়ে নয়নাভিরাম দৃশ্য। 


এবার এলো বিশ্রামটুলা। এক প্রাচীন বটগাছের ছায়ায় রয়েছে পবিত্র স্থান। চৈতন্যদেব নাকি এখানে একবার বিশ্রাম নিয়েছিলেন। 


এরপর সুপুরের কাছে অজয় নদীর উপর রেলের ব্রিজ তৈরি হয়েছে। (এটি লেখক নিঃসন্দেহে বই প্রকাশের আগে যুক্ত করেছেন কারণ বাংলার রেল প্রথম এসেছিল ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে। সম্ভবত ১৮৫০-এ এই ব্রিজ তৈরি হয়েছিল)। বহু পূর্বে সুপুর বিখ্যাত শহর ছিল। প্রাচীন প্রবাদে পাওয়া রাজা সুরথ নাকি এই নগর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর প্রাসাদের চিহ্ন লেখককে দেখানো হলো। সুপুর রাজার কালী মন্দির দেখলেন, যেখানে নাকি রাজা সুরথ হাজার হাজার ছাগবলি দিয়েছিলেন। সুপুরে অনেক ইঁটের তৈরি পাকা বাড়ি আছে। এখানকার প্রধান বাণিজ্য চাল, চিনি, সিল্কের। অনেক সাঁওতাল কাজের জন্য এখানে এসে আছে। এখানে লেখক একজন ভবঘুরেকে দেখলেন যিনি হিংলাজ (বর্তমান পাকিস্তানে অবস্থিত), সেতুবন্ধ (রামেশ্বরম), চন্দ্রনাথ (বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থিত) এবং আরো অনেক তীর্থ দর্শন করে এসেছেন। 


এরপর সুরুল হয়ে লেখক চললেন কেন্দুলির উদ্দেশ্যে। পথে পড়ল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পরিত্যক্ত রেশমকুঠী। কেন্দুলির কবি জয়দেবের জন্মস্থান। সাধক রামানন্দের শিষ্য জয়দেব শুধু কবি ছিলেন না, ছিলেন সমাজ সংস্কারকও। বাংলার একটি ক্ষুদ্র গ্রাম থেকে গীতগোবিন্দের মহিমা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। 


কেন্দুলি থেকে তাঁরা এলেন দুবরাজপুর। পথে একটি ক্ষুদ্র ন্যাড়া পাহাড় (মামা ভাগ্নে পাহাড় কি?) দেখলেন। পাহাড়ের ছায়ায় দুবরাজপুর শহর রয়েছে। মূলত সাঁওতালরা এখানে বাস করে। প্রধান বাণিজ্য দ্রব্য চিনি, গুড়। দুবরাজপুরের বেশিরভাগ জায়গায় চাষবাস হয় না, শাল জঙ্গলে পরিপূর্ণ। 


এরপর ঘন শালবন, ধানক্ষেত পেরিয়ে সুন্দর সবুজ গ্রাম বক্রেশ্বর দেখা গেল। অনেক মন্দির ও কুন্ডে শোভিত বক্রেশ্বরে প্রতিবছর শিবরাত্রিতে একটি মেলা হয়।  পান্ডাদের অত্যাচারের কথা বলেছেন লেখক এখানে। কুণ্ডের সংখ্যা আট, বেলে পাথরের পাড় ঘেরা এই কুন্ড বা কুঁয়াগুলোর বিভিন্ন দেবতার নামে নাম আছে। কুন্ডগুলোর তাপমাত্রা একরকম নয়। কুন্ডে সালফার আছে, গন্ধের বোঝা যায়। সূর্যকুন্ডের জল সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত, এতে হাত দেওয়া যায় না, ডিম দিলে সেদ্ধ হয়ে যায় কিন্তু ভাত সেদ্ধ হয় না। কুন্ডগুলি থেকে নালা মারফত জল ছোট নদী বা ঝোরায় যাচ্ছে, তার নাম শ্বেতগঙ্গা, এই নদীর জল কিছু অংশে গরম কিছু অংশে ঠান্ডা আর জলের রং সাদা। এবার তাঁরা বক্রেশ্বর শিবমন্দির দেখলেন। মন্দিরের ভেতর অন্ধকার, দীপের অল্প আলোয় দেখতে হয়। 


প্রথমে গভীর শাল গাছের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে অনেক দূর গিয়ে তারপর পাকা রাস্তা দিয়ে দশ মাইল গিয়ে আসে সিউড়ি। সিউড়ি আধুনিক শহর অনেক ইঁটের বাড়ি আছে। পাহাড়ে ঘেরা সিউড়ি স্বাস্থ্যকর স্থান। 


সিউড়ি থেকে এলেন পুরন্দরপুর, যা তার পুরনো গৌরব হারিয়ে এখন একটা সামান্য গ্রাম। (পুরন্দরপুর অতীতে কেন বিখ্যাত ছিল লেখকের ব্যাপারে কোন আলোকপাত করেননি। কোন সূত্র থেকেও জানা যায়নি এই জায়গার ইতিহাস। তবে কি পুরন্দরপুর নাম থেকে তিনি আন্দাজ করেন যে এই স্থানে পূর্বে গড় বা শহর ছিল?)। এখানে তিনি একটি বৃদ্ধাকে দেখেন, যার বয়স জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন যে তার বয়স প্রায় ১০ বছর ছিল যখন এক টাকায় ৩০ সের চাল পাওয়া যেত। সেটি বাংলার মহাদুর্ভিক্ষের বছরকে বোঝাচ্ছে (১৭৭০), যখন জন শোরের (ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর এক গভর্নর জেনারেল) চিঠি থেকে জানা যায় যে 'মাথাপিছু পাঁচ টাকা করে তখন ছোট বাচ্চাদের বিক্রি করা হয়েছিল। মা-বাবা তাদের বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল। অন্যথায় অনাথ হয়ে তারা শেয়ালের পেটে যেত।' গঙ্গা উপত্যকা দুঃখ আর মৃত্যুতে ছেয়ে গেছিল। হুগলি নদীতে প্রতিদিন হাজার হাজার মৃতদেহ ভেসে যেত। লেখকের ভ্রমণ কাল ১৯৪৬ এ বৃদ্ধার বয়স ছিল ৮৬ বছর। 


এরপর লেখক ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে বীরভূম ভ্রমণের কথা লিখেছেন। ১২ বছর পরে লেখক আবার বীরভূমে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রথমে তিনি সাঁইথিয়ার কথা লিখেছেন। সাঁইথিয়ার উত্তর-পশ্চিম অংশ সাধু মাঝি, সিংগ্রা, পাচু, সুকুল এইসব সাঁওতাল বীরদের জন্য তখন সদ্য বিখ্যাত হয়েছে (১৮৫৫-১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের সাঁওতাল বিদ্রোহ, যার নেতৃত্বে ছিলেন সিধু ও কানু)। ময়ূরাক্ষীর নদীর জলে পুষ্ট সাঁইথিয়া খুব মনোরম স্থান। পূর্ব বীরভূম পশ্চিম বীরভূমের থেকে ভূপ্রকৃতিগত দিক থেকে স্বতন্ত্র। পূর্ব বীরভূম মালভূমির উঁচু নিচু ভূমিরূপ ত্যাগ করে প্রায় সমতল হয়েছে এখানে।মাইলের পর মাইল ধানক্ষেতের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে চলার মত আনন্দ আর নেই। ১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে এই সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যেত না। মারাঠাদের লুটতরাজ তারপর নবাবী উচ্ছেদ, মহামারী, মড়কে দক্ষিণবঙ্গের এক তৃতীয়াংশ জমিতে চাষ হতো না। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু হওয়া থেকে এই দৃশ্য সম্ভব হয়েছে। ব্রিটিশ শাসনের আগে বাংলায় এত নিরবচ্ছিন্ন শান্তি কোনদিন আসেনি। পলাশীর যুদ্ধের দিন থেকে কোনো শত্রু বাংলায় আজ পর্যন্ত পা রাখতে পারেনি, কোন চাষী তার ফসল হারায়নি, কোন মানুষের এক বিন্দু রক্তপাত হয়নি। বৈদেশিক শত্রুর হাত থেকে সুরক্ষিত হয়ে জনসংখ্যা বেড়েছে, চাষ বেড়েছে, জমির মূল্য ৪০ থেকে ৯০ গুন বেড়েছে দক্ষিণবঙ্গে সমস্ত স্থানে। বীরভূমের প্রধান ফসল ধান তারপর হল রেশম চাষ। এখানকার কাল মাটিতে তুঁত ভালো হয়। এটা জানা যায় না যে রেশম চাষ এই দেশের নিজস্ব চাষ নাকি চীন দেশ থেকে আসা চায়ের মতো রেশম চাষও বাইরে থেকে আনা হয়েছে। বাংলায় রেশম চাষ হয় কিন্তু বেনারসে রেশম বস্ত্র তৈরি হয় সর্বোত্তম। মোগল বেগম নুরজাহান রেশম বস্ত্রকে মুঘল বাদশাহদের মধ্যে প্রচলন করেছিলেন। এই নুরজাহান প্রথমে বাংলার বর্ধমানে থাকতেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইতালিয়ান পদ্ধতিতে রেশম বয়াlন চালু করেছিল এবং দেশীয়রা নিজস্ব পদ্ধতি ছেড়ে দিয়েছিল। ইতালি থেকে ইংল্যান্ডের রেশম রপ্তানি এক চুক্তির ফলে বন্ধ হয়ে যাওয়াতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শুরু করে বাংলা থেকে ইংল্যান্ডে রেশমের রপ্তানি। 


(ইংরেজের গুণগ্রাহী ভোলানাথ চন্দ্র মহাশয়ের আন্দাজ ছিল না যে কিছুকাল পর থেকেই ভারতের অর্থনৈতিক অবনতির সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে ইংরেজ শাসনকালকে চিহ্নিত করা হবে। সবথেকে বড় বৈদেশিক আক্রমণকারী শত্রু হয়ে উঠবে ইংরাজ। দেশীয় শিল্প বিনষ্ট করার জন্য আর জোর করে নীল, রেশম চাষ করার জন্য ভারতবাসী ইংরাজকে ক্ষমা করবে না। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কুফল আর বেশিদিন ভারতবাসীর অজানা থাকবে না)।

                        

                        (চলছে)



প্রিয় পাঠক: আপনার মতামত আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ! অনুগ্রহ করে একটি মন্তব্য করুন এবং এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার চিন্তাভাবনা শেয়ার করুন। আমি আপনার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য আগ্রহী!

৩টি মন্তব্য:

  1. কৃষ্ণনগরে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্ব কালের নানান গল্প, নদিয়া জেলার বিভিন্ন গল্প, চৈতন্য দেবের গৃহ ত্যাগ করে কাটোয়ায় আসা কেন্দুলী গ্রামের গীতগোবিন্দের রচনাকার জয়দেব স্থান ভ্রমণ আরো হরেক জমজমাট ভ্রমণ পর্ব টি বেশ লাগলো। শিউলি

    উত্তরমুছুন
  2. কিছু বিভ্রান্তির কারণ বশত আমার মতামত দুই বার পোষ্ট হয়েছে দুঃখিত,
    শিউলি

    উত্তরমুছুন