পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

৪৯। দি ট্রাভেলস অফ আ হিন্দু ১৩ ভোলানাথ চন্দ্র

   

     

সেকালের বাঙালিদের ভ্রমণ                ধারাবাহিক 


                   -------  সুমনা দাম


                   (আগের পর্বের পরে)

দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে আগ্রার রাতের মায়াময় রূপের পরিবর্তে বাস্তব রূপ প্রকট হল। সবমিলিয়ে আগ্রার ক্ষয়িষ্ণু চেহারা লেখকের চোখে পড়ল। 


বাদশা আকবরের মন্ত্রী আবুল ফজল-এর জন্মস্থান এখানে। আকবরের নবরত্নের অন্যতম ফৈজির সমাধি এখানে কোন অজ্ঞাতস্থানে ছিল (ফৈজি প্রথমে মুসলমান যিনি হিন্দু শাস্ত্র অধ্যয়ন করেছিলেন ও তাঁর নিজের গ্রন্থাগার ছিল) সেসব লেখক খুঁজতে থাকলেন। বাবরের বিখ্যাত উদ্যান যেখানে তিনি দোয়াব এর মত জায়গায় আনারস আর চন্দন গাছ লাগানোর প্রচেষ্টা করেছিলেন। লেখক আকবরের রামবাগ (যা সম্ভবত বাবরের চারবাগ) খুঁজছিলেন, যেখানে রাজপুরুষরা যমুনার তীরে শীতল ও শান্ত পরিবেশে থাকতে ভালোবাসতেন। 


লেখক এবার দেখলেন এতমাদ-উদ-দৌলার অপূর্ব সমাধি। এই সৌধের গা থেকে দামি পাথর আর মোজাইকের কাজ খুলে চুরি করে নেওয়া হয়েছে। (এটি নূরজাহানের তৈরি তাঁর বাবার সমাধি, ১৬২২ থেকে ১৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে তৈরি)। 


শহরে ঢুকলেই আশি ফুট উঁচু মিনার যুক্ত আগ্রা দূর্গ চোখে পড়ে। দূর্গের প্রাঙ্গণে বাদশাহদের পশুর লড়াই দেখার ব্যবস্থা ছিল। ইংরেজ বণিক উইলিয়াম ফিঞ্চের লেখা থেকে জানা যায় যে এই দূর্গের প্রাঙ্গণে রবিবার ছাড়া রোজ দুপুরে বাদশা জাহাঙ্গীর এখান থেকে হাতি, সিংহ, মোষের লড়াই, চিতার হরিণ শিকার, এমনকি জন্তুর মানুষ মারা ইত্যাদি দেখতেন। বাদশা উপরের বারান্দা থেকে এই লড়াই দেখতেন। সেখানকার দরজার নাম দর্শন দরজা এই দরজার উপরে দুটো হাতির পিঠে চড়া, জয়মল ও পত্তের মূর্তি আছে, যা ওই দুই রাজপুত বীরের স্মৃতিতে আকবর তৈরি করিয়েছিলেন। ৩০০ বছর আগে তৈরি হলেও আগ্রা দূর্গের পরিস্থিতি বেশ ভালো। দূর্গের চারদিক বেষ্টন করা প্রাচীর ও পরিখা অন্তর্হিত হয়েছে। ভিতরে ৩০ ফুট চওড়া নুড়ি দিয়ে বাঁধানো পরিখা এখনো আছে। ভিতরের সুউচ্চ প্রাচীর কোনোভাবেই গোপনে পার হওয়া সম্ভব নয়। 


দুর্গের ভিতরে প্রবেশ করার দুটি দরজা। একটি দরজার নাম বোখারা গেট, যার অপর নাম উমরা সিং কা ফটক (অমর সিং দরজা)। উমরা সিং মারোয়ারের যুবরাজ ছিলেন কিন্তু তাঁর পিতা তাঁকে সিংহাসনের দাবিদার মনোনীত না করায় তিনি শাহজাহানের সেনাবাহিনীর মনসবদারের পদে যোগ দেন। তিনি একবার একপক্ষ কাল বাদশাহের রাজসভায় উপস্থিত না থেকে শিকার খেলায় ব্যস্ত ছিলেন। বাদশাহ এই অনুপস্থিতির জন্য তাঁকে ভৎসনা করেন ও অর্থদণ্ড দেন। এই অর্থদণ্ড নাজিরকে দিতে উমরা অস্বীকার করেন। তখন তাঁকে সভায় ডেকে পাঠানো হয়। ভরা রাজসভায় ক্রুদ্ধ উমরা নাজিরের বুকে ছোরা বসানো ও তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য ছিলেন বাদশাহ। বাদশাহ কোনোমতে অন্দরে আশ্রয় নেন। উমরা তাঁর হত্যালীলা চালিয়ে যান। অনেক মুঘল বীর, অভিজাত মারা যান। উমরা সিং পরে নিহত হলেও তাঁর অনুচরেরা হত্যালীলা চালায়। এই ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য যে বুখারা দরজা অর্থাৎ যেখান দিয়ে উমরা ও তাঁর অনুচরেরা রাজসভায় প্রবেশ করেছিল তার নাম হয় উমরা সিং দরজা। এই দরজা ১৭৫ বছর ধরে বন্ধ ছিল এবং এক বৃহৎ সর্প সেটি পাহারা দিত। অবশেষে ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে এই দরজা আবার খোলা হয়, এক ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারের দ্বারা। তিনি বলেন এই দরজা খোলার মুহূর্তে একটা বড় শঙ্খচূড় সাপ তাঁর পায়ের ফাঁক দিয়ে চলে যায়। 


দূর্গের ভিতরটা একটি শহরের মতো বড়। সিপাহী বিদ্রোহের সময় ৫৮৪৫ জন ইংরাজ এই দূর্গের ভিতর আশ্রয় নিয়েছিল। দূর্গ থেকে নীচে শহরের দৃশ্য খুব সুন্দর দেখায়। জঙ্গল, মাঠ, শস্য ক্ষেত্র, ঘরবাড়ি, আর সবথেকে আকর্ষণীয় তাজমহল। 


দেওয়ানি খাস যা আকবরের মন্ত্রিসভা, তার চত্বর থেকে যমুনা নদীর শোভা দেখার মত। দেওয়ানি খাস গঠনের দিক থেকে উৎকর্ষের ছাপ বহন করে। শ্বেত পাথরের স্তম্ভ, খিলান নানারকম খোদাইয়ের কাজ করা, শ্বেত পাথরের মেঝে, (স্তম্ভে সোনার গিল্টির এখনো কিছু কিছু দেখতে পাওয়া যায়) নিয়ে অসাধারণ স্থাপত্য। এখানেই আকবর তাঁর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এখানেই আবুল ফজল আইন প্রণয়ন করেছেন। খোলা চত্বরে কালো পাথরের বারো ফুট চওড়া, দুই ফুট উঁচু তখৎ বা সিংহাসন রয়েছে, যেখানে বসে বাদশাহ নদীর শীতল বায়ু সেবন করতেন, তানসেনের গান শুনতেন, ধর্মীয় আলোচনা করতেন বা বীরবলের চাতুর্য উপভোগ করতেন। 


মোগল অন্তঃপুরে সবচেয়ে আকর্ষণীয় গৃহটি হলো সীসা মহল বা আয়না ঘর, যার দেওয়াল আয়নায় মোড়া ছিল। কৃত্রিম উপায়ে স্থাপত্যের সাহায্যে ঘর ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা ছিল। শ্বেত পাথরের জালির কাজের মধ্যে দিয়ে হারেমের মহিলারা যমুনা দর্শন করতেন। ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সেনার আক্রমণের সময় এই ঝরোখার একটি অংশ কামানের গোলায় ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে, আয়নার ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে গেছে, কিছু কাচ ভেঙ্গে গেছে, ফোয়ারাগুলি শুধুমাত্র দর্শক এলে চালু করা হয়। বাদশা আকবরের সময় পাঁচ হাজার রমণী ছিল হারেমে। কিন্তু হারেমের আকার এত বড় নয় যে প্রত্যেককে আলাদা ঘর দেওয়া সম্ভব হত। 


জেনানা থেকে বেরিয়ে একটি বড় চত্বরে এলেন লেখক। সেখান থেকে কিছু সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে একটি দরজা, দরজার ওপারে অন্ধকার সিঁড়ি পৌঁছায় তাইখানা বা সুড়ঙ্গ পথে। এই সুড়ঙ্গগুলি নদী পর্যন্ত গেছে। টর্চের আলোর সাহায্যে তার ভিতরে যান লেখক। দেখেন সরু আঁকাবাঁকা পথ, বাদুড় আর পাখির ডানা ঝাপটানো শব্দ শোনেন, ফাঁসি ঘর দেখেন। সেখানে হারেমের অবাধ্য নারীদের হয়তো এই তাইখানার পথে মেরে যমুনায় ফেলে দেওয়া হতো বলে লেখক বলেন। 


জনসাধারণের জন্য খোলা দরবার দেওয়ানি আম, যেখানে মোগল বাদশাহরা আম আদমীর সঙ্গে দেখা করতেন। এটি ভারতের একটা অন্যতম বৃহত্তম হল, যা ১৮০ ফুট লম্বা ও ৬০ ফুট চওড়া। যথেষ্ট আলো হাওয়াযুক্ত এই সরল অথচ অভিজাত গঠনের হলটি সুন্দর শ্বেত পাথরের স্তম্ভ, পিলার দিয়ে সজ্জিত। এখানে এখনো বাদশাহের সিংহাসন রয়েছে। যে শ্বেতপাথরের খন্ডের উপর দাঁড়িয়ে মন্ত্রীরা ভাষণ দিতেন সেটিও রয়েছে। টমাস রো ও টেরি (ইংল্যান্ডের দূত) রাজসভার স্বর্ণরৌপ্য খচিত যে রকম সাজসজ্জা কথা বলেছেন, সেই রাজকীয় সাজসজ্জা এখন আর নেই। হলের এক কোণে ১১ ফুট লম্বা, ৯ ফুট চওড়া সোমনাথ দরজা রাখা আছে। এই দরজা সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন করে গজনীর সুলতান মামুদ গজনীতে নিয়ে যান। ভারতের ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল লর্ড এলেনবরো সেটি ভারতে আনান ও আগ্রা দূর্গে সেটি রাখা হয় (১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে কাবুল যুদ্ধের সময়)। 


দেওয়ানি আমের কাছে মিস্টার জন রাসেল কোলভিনের সমাধি আছে, যিনি উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের লেফট্যানেন্ট গভর্নর ছিলেন ও সিপাহী বিদ্রোহের সময় দূর্গের মধ্যে কলেরায় মারা যান। 


মতি মসজিদ পুরো শ্বেত পাথরে তৈরি বলে মুক্তা বা মোতির সঙ্গে তুলনীয়। এই অভিজাত সুন্দর মসজিদটি মুঘল স্থাপত্যের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। এর গায়ের লেখা থেকে জানা যায় ১৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দে শাহজাহান হারেমের মহিলাদের উপাসনা করার জন্য এটি তৈরি করে দিয়েছিলেন ৬০ লাখ টাকা খরচ করে। মসজিদের সামনে আছে অযু করার জল, মাঝে ফোয়ারা। সেই ফোয়ারা এখন জল-শূন্য। 


শাহজাহানের একটি ৪০ ফুট ব্যাসের একটিমাত্র শ্বেত পাথরকে খোদাই করে তৈরি স্নানের চৌবাচ্চা ছিল, যেটি আর এখন নেই। লর্ড হেস্টিংস এটি ইংল্যান্ডে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন রাজার জন্য। কিন্তু ওজনের কারণে সম্ভব হয়নি। চৌবাচ্চাটির শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল জানা নেই। 


আগ্রা দূর্গ ১৫৬৬ খ্রিস্টাব্দে আকবর কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। এই দূর্গের স্থানে পূর্বে কোন দূর্গ ছিল তা হিন্দুদের না পাঠানদের সেটা জানা নেই। ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই দূর্গে একটি বিরাট কামান ছিল, সেটি যে কত পুরনো তা নিয়ে মতানৈক্য আছে। এটির গায়ে অনেক পুরনো দিনের লেখা ছিল। আকবরের নামও তার মধ্যে পরবর্তীকালে খোদিত হয়েছিল। ব্রিটিশরা এটিকে প্রথমে কলকাতা ও পরে ইংল্যান্ড নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওজনের কারণে সম্ভব হয়নি। সেটি যমুনার পাড়ে কিছুদিন পড়ে থাকার পর গোলা দিয়ে সেটিকে টুকরো টুকরো করে বিক্রি করা হয়। যদি সেটি থাকতো তবে গবেষণা করে হয়তো জানা যেত তার গায়ে কোন যুগের লিপি ছিল। 


আগ্রা দূর্গ থেকে তাজমহল পর্যন্ত সুন্দর রাস্তা ও নদীতীর রয়েছে, যা ইংরেজরা তৈরি করেছে, ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে দুর্ভিক্ষ পীড়িত দরিদ্রদের শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগিয়ে। এই রাস্তা তৈরি সময় কিছু পুরনো ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। 


তাজমহলের অপার্থিব সৌন্দর্যের কথা বিস্তারিতভাবে লেখক বর্ণনা করেছেন। সেগুলি বিস্তারিত ভাবে না বলে নতুন তথ্য যা পাওয়া গেছে এই লেখা থেকে সেগুলি বিবৃত হল। 


মমতাজ বেগমের কবরের উপর একটি শ্বেত পাথরের ফলকে একটি ১০০ রকম পাথরের কাজ করা ফুলের নকশা আছে। আরবিতে তাঁর নানা গুণের কথা লিখে তাতে নানারকম অতি দুর্মূল্য রত্ন খচিত করা আছে, যেগুলি কোন অপবিত্র হাত চুরি করতে পারেনি। (তাহলে কি ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে এই মূল্যবান রত্ন গুলি যথাস্থানে ছিল?)। 


১৬৩১ এ মৃতা মমতাজের পাশের কবরে ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে শাহজাহানের মৃত্যু হলে আওরঙ্গজেবের উদ্যোগে তাঁকে শায়িত করা হয়। 


একদিন মমতাজ শাহজাহানের সঙ্গে তাস খেলছিলেন মমতাজ সেদিন স্বামীকে জিজ্ঞাসা করেন তিনি মারা গেলে কি করা হবে। শাহজাহান বলেন এমন একটি সমাধি তৈরি করবেন চিরদিন সবাই তাঁকে মনে রাখবে। মমতাজের মৃত্যু হয় এক কন্যা সন্তানের জন্মের সময়, যে সন্তানের কান্না তিনি ও তাঁর কন্যারা শিশুটির জন্মের আগেই শুনতে পেতেন। এই ঘটনার জন্য তাঁর ধারণা ছিল যে তিনি শীঘ্র মারা যাবেন। তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাদশা চিকিৎসক, ধাত্রী প্রভৃতির যথেষ্ট ব্যবস্থা করেছিলেন প্রসবের সময়। কিন্তু সন্তান জন্মের দুই ঘন্টা পরে মমতাজ মারা যান। মৃত্যুশয্যায় মমতাজ শাহজাহানকে তাঁর সমাধি সংক্রান্ত প্রতিজ্ঞার কথা মনে করিয়েছিলেন। 


তেভারনিয়ের (ফরাসি পর্যটক) লিখেছেন তাজ তৈরি হতে কুড়ি হাজার কর্মীর বাইশ বছর লেগেছিল। জয়পুরের রাজা শ্বেতপাথর উপহার দেন, যা ১৪০ মাইল দূর থেকে আনতে হয়। বারনিয়ের (ফরাসি পর্যটক) বলেছেন মমতাজের মৃত্যুতে শাহজাহান অত্যন্ত মর্মাহত হন। 


ইউরোপীয়রা কোন ভারতীয়কে তাজমহল নির্মাণের কৃতিত্ব দিতে রাজি নন। তারা বিশ্বাস করেন ফরাসী স্থপতি অস্টিন ডি বরডিউক্স  তাজমহলের পরিকল্পনা ও নির্মাণ করেছিলেন। এই ব্যক্তি শাহজাহানের সভায় ছিলেন প্রধান স্থপতি হিসেবে ও প্রতি মাসে এক হাজার টাকা ও নানা  উপঢৌকন পেতেন। দেশীয়রা তাঁকে উস্টান ইসন নামে জানতো। শাহজাহানের সভায় অনেক ইউরোপীয় ছিলেন হকিংস (ব্রিটিশ দূত একজন মনসবদার), তেভার্নিয়ার (একজন রত্নকার), বারনিয়ার (একজন চিকিৎসক)। তাই অস্টিনের একজন স্থপতি হিসেবে থাকাটা আশ্চর্যের বিষয় নয়। (ওস্তাদ আহমেদ লাহোরী তাজের প্রধান স্থপতি ছিলেন বলে সভার ঘটনাপঞ্জি লেখক আব্দুল হামিদ লাহোরী তার বাদশাহানামা বইয়ে লিখে গেছেন)। তেভারনিয়ের তাজ তৈরি হতে দেখেছেন, কিন্তু তিনি অস্টিনের বিষয়ে কিছু লেখেন নি। 


১৮১৪ তে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাজমহলের সারানোর কাজে এক লক্ষ টাকা ব্যয় করেন। 


তাজের বিপরীতে যমুনার অপর পাড়ে একটি অসমাপ্ত সৌধ আছে। যেটিতে শাহজাহান নিজের সমাধি হিসেবে তৈরি করছিলেন কিন্তু ঔরঙ্গজেবের কারণে (আওরঙ্গজেব শাহজাহানকে শেষ জীবনে বন্দি করে রাখেন) তা শেষ করতে পারেননি। 


উনবিংশ শতাব্দীর আগ্রা চার মাইল দৈর্ঘ্যে ও তিন মাইল প্রস্থের শহর। এর বাইরের প্রাচীর আর নেই। ভিতরের প্রাচীরের কিছু কিছু চিহ্ন পাওয়া যায়। পূর্বের জনসাধারণের স্নানাগার, কুস্তির আখড়া প্রভৃতি এখন আর নেই। রাজা মান, রাজা বীরবল প্রমুখ অভিজাতদের প্রাসাদের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। পুরনো স্থাপত্যের ইঁট দিয়ে এখনকার ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে। মোগলদের সময়কার ঘোড়ায় টানা এক্কাগাড়ি শুধুমাত্র এখনো আগ্রায় রয়ে গেছে।



এখানে বইটির প্রথম খণ্ড শেষ হল। এবার শুরু হবে 'দি ট্রাভেলস অফ আ হিন্দু' বইয়ের দ্বিতীয় খণ্ড।
 
                         (চলছে)
  

৩টি মন্তব্য:

  1. আগ্রার জানা অজানা বহু কাহিনী ভোলানাথ চন্দ্র মহাশয়ের আগ্রা ভ্রমণ বৃত্তান্তের পর্বটি থেকে আবার ও রোমন্থন করা গেল। অনেক ধন্যবাদ উপস্থাপিকা কে ।
    শিউলি।

    উত্তরমুছুন
  2. কত মূল্যবান সম্পদ আমাদের ভারতবর্ষ থেকে লুট হয়ে গেছে ভাবতেই মন ভারাক্রান্ত হয়

    উত্তরমুছুন