সেকালের বাঙালিদের ভ্রমণ ধারাবাহিক
------- সুমনা দাম
(আগের পর্বের পরে)
কশ্যপ মুনির আশ্রম ছিল বলে এই রাজ্যের নাম কাশ্মীর আর বর্তমানে কাশ্মীরের রাজধানী হল শ্রীনগর। বিতস্তা (ঝিলম) নদী শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তার উপর সাতটি কাঠের সেতু দিয়ে শহরের দুটি দিক যুক্ত হয়েছে। সেতুকে এখানে কদল বলা হয়। মানুষজন এখানে নদীতে সবসময় নৌকায় যাতায়াত করে। এখানকার সব বাড়ি কাঠের শুধু মহারাজার ও অল্প কজন ধনী ব্যক্তির সুন্দর অট্টালিকা আছে। রাজবাড়ী শের গড়ী প্রাসাদ বিতস্তা নদীর তীরে অবস্থিত। ১৮৬৯ -এ লেখক যখন এখানে আসেন তখন একবার বর্ষায় নদীতে জলোচ্ছ্বাস হয়ে নদীর তীরের সব কাঠের বাড়ি ভেঙে চুরমার হয়েছিল।
শ্রীনগরের কাছে একটি হ্রদ আছে ডাল লেক, ডল কথার অর্থ হল সাধারন অর্থাৎ এটি সর্বসাধারণের হ্রদ। এই হ্রদের জল বৃদ্ধি পেলে শ্রীনগর শহর প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই নদী ও হ্রদের মধ্যে একটি বাঁধ আছে।
শ্রীনগরে এসে নৌকা করে এক প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত নদীপথে ভ্রমণ করলে সব দেখা যায়। শহরে ঢোকার মুখে মহারাজা বিভিন্ন বাংলো অর্থাৎ বিশ্রামাগার নির্মাণ করে দিয়েছেন, যেগুলি মূলত ইংরেজ পর্যটকদের থাকার জন্য ব্যবহৃত হয়।
রাজবাড়ী দেখতে অনেকটা সাধারণ কিন্তু নদীর পাড়ে অবস্থিত পাথরের তৈরি এই প্রাসাদ খুব রমণীয় লাগে। রাজবাড়ীর দিকের পাড়ে অবস্থিত গদাধর দেবের সুন্দর সোনার চূড়াযুক্ত মন্দির আছে। শহরে বেশ কিছু খাল আছে সেগুলি নদীর সঙ্গে যুক্ত। খালগুলির ওপর কদল বা সেতু রয়েছে। রাজবাড়ীর বিপরীত দিকে বসন্ত বাগ। এখানে কালো পাথরের একটি উঁচু আসন আছে। প্রতিবছর এখানে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে গদাধর দেবকে এনে গোবর্ধন পূজা ও অন্নকূট উৎসব হয়। এই উৎসবে মহারাজা সমগ্র প্রজাদের অন্নদান করেন। হিন্দু ও মুসলমানদের খাদ্য প্রস্তুত হওয়ার আলাদা স্থান নির্দিষ্ট আছে। নিকটে সাহ হমদানের জেয়ারৎ অর্থাৎ মসজিদ আছে। এটি কাশ্মীরের অতি প্রাচীন ও অত্যুৎকৃষ্ট মসজিদের একটি। কথিত আছে এখানে পূর্বে কালীমন্দির ছিল, তার উপরে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। এই মসজিদের কাছে নদীর অপর পাড়ে নয়া মসজিদ বা পত্তর মসজিদ নামক বেগম নুরজাহানের প্রতিষ্ঠা করা মসজিদ রয়েছে। এরপরে নদীর ডান পাড়ে বাদশাহ জালালউদ্দিনের (পঞ্চদশ শতাব্দীতে কাশ্মীরের রাজা। ইনি শিল্প সাহিত্য বিষয়ে কাশ্মীরের অনেক উন্নতি করেছিলেন) সমাধি রয়েছে। শোনা যায় তিনি প্রথম তুর্কিস্তান থেকে কাশ্মীরে শালশিল্প, কলমদানির কাজ ও কাচ তৈরি শিক্ষা এনেছিলেন। তাঁর নামে জানা কদলের নাম হয়েছে।
হিন্দুদের শঙ্করাচার্যের টিব্বা বা পাহাড় মুসলমানদের কাছে তখত-ই সলিমান বা সলোমনের সিংহাসন নামে খ্যাত। এই টিলায় ওঠার দুটি পথ আছে কিন্তু শেষের অংশে এত দুর্গম পথ যা অতি সাবধানে হামাগুড়ি দিয়ে ওঠা নামা করতে হয়। এখানে শিবের মন্দির ও আরো কয়েকটি মন্দির রয়েছে। যে পাথরে তৈরি এই মন্দির তা এই পাহাড়ের নয়। এত বড় বড় খন্ডের পাথর এত উপরে কী করে প্রাচীন সময়ে তোলা হয়েছিল তা ভেবে বোঝা যায় না। হরি পর্বত শ্রীনগরের আরেকটি ছোট টিলা। ১৫৯০-এর বাদশা আকবর এখানে দুর্গের প্রাকার নির্মাণ করেন কিন্তু দুর্গ গঠন করা হয়নি। ভিতরে ছোট মন্দির, কামান ছাড়া কিছু নেই। এই দুই টিলার উপর থেকে শ্রীনগরের দৃশ্য খুব সুন্দর দেখায়।
শের গড়ী বা রাজবাড়ীর সামনে থেকে চুটকোল নামে একটি খাল বিতস্তা নদীর সঙ্গে ডাল লেককে সংযুক্ত করেছে। এই খালের শুরুতে মহারাজার পালিত হাঁসের দল খেলা করে বেড়ায় আর রাজার নানা রকম রাজ তরী এখানে রাখা থাকে। আধ ক্রোশ দূরে ড্রোগজন বা হ্রদের দ্বার। যখন নদীতে জল কমে থাকে তখন তার কপাট খোলা আর জল বেশি হলে নিজে থেকে কপাট বন্ধ হয়ে যায়। তাই নদীতে জলোচ্ছ্বাসে হ্রদের জল বাড়ে না। এই হ্রদে পদ্ম, কুমুদ প্রভৃতি ফুটে থাকে। এখানকার অনেকে পদ্মপাতায় খাবার খায়। থালার পরিবর্তে এই হ্রদের কিছু অংশে ভাসমান কৃষিক্ষেত্র, কুঁড়েঘর রয়েছে। এই ভাসমান জমি কাশ্মীরীরা তৈরি করে। হ্রদের যে জায়গার জলের গভীরতা কম সেখানে তারা জলজ লতাপাতা, গুল্ম দেড় হাত মতো রেখে কেটে দেয়। তার উপর লতা ও মৃত্তিকা জমিয়ে জমিয়ে তা দৃঢ় করে তোলা হয়, পরে এই জমিতে কৃষি কাজ হয়। জলে যাতে এই ভূখণ্ড ভেসে না যায় তাই লম্বা ও মোটা কাঠ দিয়ে স্থানে স্থানে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়।
হ্রদের পশ্চিম দিকে হজরতবল গ্রামে একটি বড় মসজিদ আছে। সেখানে হজরত মোহাম্মদের শ্মশ্রুর কেশ রক্ষিত আছে বলে কথিত। এখানে প্রতি বছর চারটি মেলা হয়। সেখানে হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে উপস্থিত হয়। এই উপলক্ষে ডাল লেকে নৌকা প্রতিযোগিতা হয়।
চার চিনার একটি ছোট দ্বীপ ডাললেকে, যাতে চারটি চিনার গাছ আছে। নাসিম বাগ, শালিমার বাগ, নিশাত বাগ, চশমা শাহী প্রভৃতি মনোরম ক্রীড়া উপবন রয়েছে। উপবনগুলিতে কৃত্রিম জলপ্রপাত, ফোয়ারা এবং ধাপে ধাপে তৈরি বাগান আছে। এখানকার এইসব বৈশিষ্ট্য বাংলা প্রভৃতি সমতল ভূমিতে অনুপস্থিত। ডাল হ্রদের মধ্যে নিশাত বাগের কাছে একটি ছোট দ্বীপ আছে যার নাম সোনালং অর্থাৎ সুবর্ণ দ্বীপ। এখানে ইঁট পাথরের পুরাতন ইমারতের ধ্বংস চিহ্ন দেখা যায়।
হ্রদের অনুচ্চ পাহাড়ের গায়ে আছে পরিমহল নামের জাহাঙ্গীর বাদশা নির্মিত মহলের ধ্বংসাবশেষ। এখান থেকে হ্রদের দৃশ্য অপূর্ব।
এবারে লেখক কিছু অদ্ভুত নৈসর্গিক ব্যাপারের কথা লিখেছেন, যার ব্যাখ্যা তিনি পাননি। যেমন ক্ষীর ভবানী দেবীর মন্দিরের কুন্ডের জল নিয়ত বর্ণ পরিবর্তন করে। নীল হলুদ প্রভৃতি রং হয়। জল লাল হলে মনে করা হয় অশুভ লক্ষণ, দেবী কুপিত হয়েছেন।
শ্রীনগরের ডানদিকে ডেনসু নামক পরগণায় বনহামা (বনাহামা, বুদগাম জেলা) নামে একটি গ্রাম আছে। সেখানে একটি কুড়ি হাত চওড়া নালা আছে যেটি সারা বছর শুকনো থাকে। কিন্তু প্রতিবছর ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এর উপরের উঁচু জমির নানা স্থান থেকে বিন্দু বিন্দু জল নিঃসৃত হয়ে এই নালায় জমে ও এটিকে পূর্ণ করে দেয়। লোকে এখানে পুণ্যস্নান করে, একে জট গঙ্গা বলে। উঁচু জমিকে মহাদেবের জটা ভাবা হয়।
মাচিহামাতে একটি বড় জলাশয় আছে তাকে হাকের সর (হোকারসার পাখির অভয়ারণ্য) বলা হয়। এই জলাশয় বড় বড় ভাসমান ভূমি খণ্ড আছে। হাওয়ায় এই ভূমিখণ্ডগুলি এদিক ওদিক সরে যায়। ভূমিখন্ডগুলিতে গাছ আছে, গবাদিপশুর পশু চারণভূমি হিসেবে সেগুলি ব্যবহৃত হয়।
দেবসরে (দেবসার, কুলগাম জেলা) বাসুকি নাগ নামে এক চশমা বা কুণ্ড আছে। বসন্তকালের আগমন থেকে শস্য পাকা পর্যন্ত এই কুন্ডে জল থাকে। তারপর এক ফোঁটাও জল থাকে না। ওই জল সরে গিয়ে পিরপাঞ্জাল পর্বতের অপরদিকে গোলাবগড় নামক কুন্ড পূর্ণ করে। এই ভাবে ছয় মাস ধরে চক্র চলতে থাকে। কিন্তু এই দুই কুন্ডের মধ্যে দূরত্ব দশ ক্রোশ হবে। কিভাবে সংযোগ সম্ভব তা বোঝা যায় না। (বর্তমানে এই জল আসা-যাওয়ার খবর দেবসারে আছে কিন্তু কিসওয়ার জেলার গুলাব গড়ে সেরকম কোন তথ্য পাওয়া যায়নি)।
এরপর লেখক কাশ্মীরের পূর্ব দিকের স্থান আলোচনা করেছেন: পান্দ্রিতন (পান্দ্রেথন মন্দির) একসময় কাশ্মীরের রাজধানী ছিল। সম্রাট অশোক এখানে একটি বৌদ্ধ মন্দির স্থাপন করেন, যেখানে ভগবান বুদ্ধের দাঁত সংরক্ষিত ছিল। এখন একটি দেবালয়ের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়।
পাম্পুর কেশর বা জাফরানের জন্মস্থান। এটি অনেক পূর্বে পদ্মপুর নামে এক রাজা স্থাপন করেন আগে নাম ছিল পদ্মপুর, যা পদ্ম নামের এক রাজা প্রতিষ্ঠা করেন। কার্তিক মাসে জাফরানের ফুল ফুটলে অপূর্ব শোভা হয়।
এর দেড় ক্রোশ দূরে ফুকনাগ ও কালীশনাগ নামে লোহা ও গন্ধক মেশানো জলের কুন্ড আছে, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।
অবন্তীপুর এককালে কাশ্মীরের রাজধানী ছিল। রাজা অবন্তিবর্মা, এটি স্থাপন করেছিলেন এখন কিন্তু এখন কিছু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে মাত্র।
এর কিছু দূরে পাহাড়ের উপর প্রাচীন মন্দির রয়েছে একে সমাথাং বলে। কথিত আছে কাশ্মীর যখন জলমগ্ন ছিল তখন মহাত্মা কাশ্যপ এই স্থানে বসে সহস্র সহস্র বছর ধরে যোগ ক্রীড়া সাধন করেন।
বিজবেহাড়া সম্ভবত বিদ্যাবিহার নামের অপভ্রংশ। সম্রাট অশোক এখানে বৌদ্ধ মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। মুসলমান শাসনকালে সিকান্দার নামে এক শাসক সেটি ধ্বংস করে মসজিদ তৈরি করেন। রাজা গোলাব সিং সেই মসজিদ নষ্ট করে পুনরায় মন্দির নির্মাণ করেন (বিজয়েশ্বর মন্দির)।
অনন্ত নাগের নাম মুসলমান আমলে ইসলামাবাদ হয় এবং ইংরেজ আমলেও সেই নামই বজায় ছিল। পূর্বে হিন্দু আমলের নাম হল অনন্তনাগ। অনন্তনাগ কুন্ডটি বৃহৎ এবং এর মধ্যে অনেক মাছ খেলা করে।
অনন্তনাথ থেকে ৫ মাইল দূরে অবস্থিত মাটন বা মার্তন্ড বা মাত্তান হিন্দুদের একটি পবিত্র তীর্থ। এখানকার সূর্য মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দর্শনীয়। কাশ্মীরেরা একে পান্ডু লড়ী বলে অর্থাৎ পান্ডবদের নির্মিত মন্দির। ভূমজু গুহা মাত্তান-এর কাছের হিন্দুদের পবিত্র তীর্থ। এখানে কয়েকটি ছোট ছোট ও দুটি দীর্ঘ গুহা রয়েছে। একটি বড় গুহায় একটি মন্দির রয়েছে।
আচ্ছাবল একটি প্রাকৃতিক ঝরনা সংলগ্ন উপবন যা জাহাঙ্গীর তাঁর প্রিয়তমা পত্নী নুরজাহানের জন্য নির্মাণ করেন। বল শব্দের অর্থ ঝর্ণা। এখানে ফোয়ারা, জলপ্রপাত, জলাশয়, প্রাচীন মহলের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।
কুক্কুরনাগ (কোকারনাগ) একটি অনেকগুলি ছোট ছোট ঝর্ণার সমাবেশ।
বৈরনাগ (বেরিনাগ) একটি প্রাকৃতিক ঝরনা ও জলাশয়। এখানে প্রাচীন প্রাচীর, পথ, অট্টালিকার ভগ্নাংশ রয়েছে। সম্রাট জাহাঙ্গীর এগুলি তৈরি করেছিলেন। শাহজাহানের কিছু কীর্তিও এখানে ছিল। কোশানাগ (কৌশার নাগ) বা হরীবল বা হরবাল একটি সুন্দর পার্বত্য হ্রদ। এর থেকে কয়েকটি জলপ্রপাত উৎপন্ন হয়েছে। এর মধ্যে হরবল শ্রেষ্ঠ (আহারবল জলপ্রপাত)।
হিন্দুদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তীর্থ অমরনাথ। প্রতি বছর একমাত্র ভাদ্র মাসের রাখি পূর্ণিমার দিন অমরনাথ দর্শন হয়। ওই দিন সহস্র সহস্র যাত্রী সমবেত হয়ে অমরনাথ দর্শন করেন। কোন কোন অবশ্য নির্ভীক সন্ন্যাসী ওখানে দু-তিন মাস থেকে যান। রাখি পূর্ণিমার ১৫ দিন পূর্বে সকলকে সংগ্রহ করার জন্য কাশ্মীরের রাজা ঝান্ণ্ডি বা ছটি বা পতাকা শ্রীনগরের কাছে রামবাগ উপবনে ওড়ানো হয় এবং ৮ দিন আগে শ্রীনগর থেকে যাত্রা শুরু হয়। সন্ন্যাসী ও দরিদ্র তীর্থযাত্রীদের মহারাজা পাথেয় দেন। অনন্ত নাগে পতাকা পৌঁছলে যে যেখানে থাকে এসে জড়ো হয়। সেখান থেকে আহার্য ও প্রয়োজনীয় সব দ্রব্য কিনে নিয়ে যেতে হয়। কারণ তার পরে আর কিছু পাওয়া যায় না। পতাকাকে অনুসরণ করে সবাই চলে পরবর্তী আটাশ ক্রোশ ৫ আড্ডায় ও ৫ দিনে। পথ এত দুর্গম ও বিপদজনক যে কোন কোন স্থানে পায়ের শব্দ বা কথা বললেও যে কম্পন হয় তাতে পাহাড়ের গা থেকে শিলা বা বড় খসে পড়ে যাত্রীর প্রাণনাস হয়। প্রচুর তুষারপাত হয়। প্রতি বছর অনেক যাত্রীর মৃত্যু হয়। অনেকে অপারগ হয়ে মাঝ পথে ফিরে আসে। এক ক্রোশ থাকতে পঞ্চতরণী, এই ঝর্ণার পাঁচটি শাখা। এখানে স্নান করে যাত্রীরা বস্ত্র ত্যাগ করে ভুর্জপত্রের কৌপিন পরে বা উলঙ্গ অবস্থায় মহাদেবের জয়ধ্বনি করতে করতে গুহায় যায়। শোনা যায় প্রতি পূর্ণিমায় বরফের লিঙ্গ পূর্ণরূপ ধারণ করেন এবং প্রতিপদ থেকে এক এক কলা হ্রাস পেতে পেতে অমাবস্যায় সম্পূর্ণ অদৃশ্য হন এবং পুনরায় ষোলকলা লাভ করে পরের পক্ষকালে। লিঙ্গ ছাড়া গুহায় শিবের বাহন বৃষের মূর্তি ও কিছু দেবদেবীর ভাঙ্গা মূর্তি রয়েছে। পূজা দিয়ে সেদিনই যাত্রীরা প্রত্যাবর্তন শুরু করে, রাত্রি বাস করে না।
কাশ্মীরের ঠিক কোন স্থানে সতীর কণ্ঠদেশ পতিত হয়েছিল তা সুনির্দিষ্ট করে জানা যায় না বলে সমগ্র কাশ্মীরকে সারদা পীঠ বলে। সোপুর নামক স্থানে সারদা দেবীর প্রতিমূর্তি আছে। কাশ্মীরি অক্ষরকেও সারদা লিপি বলে। (বর্তমান সোপুর নামক স্থান, বারামুলা জেলাতে সারদা মন্দির আছে। আবার আজাদ কাশ্মীরের নীলম নদীর কাছে সারদা পীঠ, প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। সারদা বলতে এই দুই স্থানে অবশ্য সরস্বতী দেবীকে বোঝায়। এই সারদার মন্দির শক্তিপীঠ না হয়ে সারদাপীঠ হওয়া উচিত। অনুরূপে সারদাপীঠ শঙ্করাচার্য প্রতিষ্ঠিত দ্বারকা সারদাপীঠ, শৃঙ্গেরী সারদাপীঠ রয়েছে।
(চলছে)
রাজেন্দ্র মোহন বসু মহাশয়ের কাশ্মীর ভ্রমণের অতিশয় মনোরম এই পর্বটি পড়ে কিছু অজানা কাহিনীর সঙ্গে কিছু পরিচিত কাহিনীর সম্মুখীন হলাম। কিছু সময় কাশ্মীরে থাকার কারণে এই পর্বে বর্ণিত বেশ কিছু স্থান ও কাহিনীর সঙ্গে পূর্ব পরিচিতি রয়েছে যারপরনাই পর্বটি আমার কাছে বেশ আকর্ষণীয় লাগলো।শিউলি
উত্তরমুছুনধন্যবাদ 🙏
উত্তরমুছুন