সেকালের বাঙালিদের ভ্রমণ ধারাবাহিক
------- সুমনা দাম
(আগের পর্বের পরে)
সুতি (মালদা) পর্যন্ত নৌকায় এসে অপর পাড়ে অর্ধদিবস দূরত্বের গন্তব্য গৌড় (বর্তমান মালদা) দেখার লোভ কেউ ছাড়তে পারে না বলেছেন লেখক ভোলানাথ চন্দ্র।
বাংলার ইতিহাসের সব থেকে উল্লেখযোগ্য স্থান গৌড়, পাল ও সেন রাজাদের এবং তৎপরবর্তী মুসলমান শাসকদের অনেক কীর্তিতে বর্ণময়। গৌড়ের সূচনা কিভাবে হলো তা নিয়ে অস্পষ্টতা আছে। জেমস রেনেলের (মানচিত্রকর ও ঐতিহাসিক) মতে গৌড়, যার অপর নাম লখনৌতি বা লক্ষণাবতী তা সুপ্রাচীন গ্রীক পর্যটক টলেমির বর্ণিত গঙ্গা রিডি। এটি খ্রিস্ট জন্মের ৭৩০ বছর আগেও ছিল বাংলার রাজধানী। হুমায়ুন এই স্থানটিকে পরবর্তীকালে সুন্দর করে গড়ে তোলেন এবং নাম দেন জান্নাতাবাদ। খ্রিস্টপূর্ব ৭০০ বছর আগে গৌড়ের অস্তিত্ব নিয়ে লেখক সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন সে ক্ষেত্রে ভগবান বুদ্ধ এখানে আসতেন ও বৌদ্ধ সাহিত্যে তার উল্লেখ থাকতো। মহাভারতেও গৌড়ের কোন উল্লেখ নেই। পুরানে বাংলার নাম বঙ্গ, গৌড় নয়। কাজেই গঙ্গারিডি অন্য কোন স্থান, গৌড় নয়। ফা হিয়েন (চৈনিক পর্যটক) পঞ্চম শতাব্দীতে এবং হিউয়েন সাং (চৈনিক পর্যটক) সপ্তম শতাব্দীতে ভারতে এসেছিলেন। তাঁরা কিন্তু গৌড়ের কথা কিছু বলেননি। উইলফোর্ড (ভারতবিদ ফ্রান্সিস উইলফোর্ড) গৌড়ের প্রতিষ্ঠা ৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে মগধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হয় বলেছেন। এই ধারণাটি সঠিক হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। বাঙালির সবথেকে গৌরবময় সময় ছিল যখন গৌড়ের রাজাদের বাণিজ্যতরী গঙ্গায় ভেসে চলত পূর্বে কামরূপ, পশ্চিমে কম্বোজ, দক্ষিণে কলিঙ্গের উদ্দেশ্যে। পাল যুগের অবসানে আসে সেন বংশ। সেন বংশের শেষ রাজা লক্ষণ সেন নিজের নাম অনুসারে গৌড়ের নাম দেন লখনৌতি বা লক্ষণাবতী। লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে বখতিয়ার খিলজী গৌড়ের মুসলমান বা সুলতানি শাসনের পত্তন করেন। কিছু মূর্তি আর তাম্রলিপি ছাড়া হিন্দু যুগের তেমন কোন চিহ্ন গৌড়ে দেখতে পাওয়া যায় না। হিন্দু মন্দিরের ভগ্নাংশ ব্যবহার করে মুসলমান মসজিদ তৈরি হয়েছে। সোনা মসজিদ, কদম রসুল অষ্টাদশ শতাব্দীতে তৈরী হওয়া মুসলমান স্থাপত্যের উদাহরণ। গৌড়ের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জাহাঙ্গীর এর নাম দিয়েছিলেন জান্নাতাবাদ বা স্বর্গ নগরী। ষষ্ঠদশ শতাব্দীর শেষ থেকে গৌড়ের পতন হয় এবং ক্রমে তা হিংস্র প্রাণী সঙ্কুল জঙ্গলে পরিণত হয়। ভগ্নস্তূপ থেকে মার্বেল নিয়ে মুর্শিদাবাদ, মালদা ইত্যাদি স্থানে বাড়ি তৈরির কাজে লাগানো হয়।
এবার লেখকের গন্তব্য অধুনা ঝাড়খণ্ডের রাজমহল। রাজা মানসিংহের (সম্রাট আকবরের সুবেদার) প্রতিষ্ঠিত ও সুলতান সুজার (শাহজাহানের পুত্র) প্রিয় শহর এই রাজমহল একসময় জাঁকজমকে দিল্লির সমকক্ষ ছিল কিন্তু এখন শ্রীহীন সামান্য নগর। কিছুদিন আগেই রাজা মানসিংহের কিছু কীর্তির অবশেষ ছিল রাজমহলে। ছিল শাহ সুজার সুন্দর প্রাসাদ, মসজিদ, তোরণ দ্বার। অনেক চিহ্নই রেলওয়ের রাস্তা বানানোর জন্য নষ্ট করে ফেলতে হয়েছে। পর্যটনগত দিক থেকেও রাজমহল গুরুত্ব হারিয়েছে। সুন্দর সবুজ পাহাড়, গঙ্গা এই স্থানের সৌন্দর্যকে অবশ্য আজও রক্ষা করে চলেছে। রাজমহলের গঙ্গার অপর পারে সিরাজ দৌল্লা পলাশীর যুদ্ধের পরে ধৃত হয়েছিলেন।
এবার লেখক ইন্ডিয়া জেনারেল স্টীম নেভিগেশন কোম্পানির স্টীমার ধরে চললেন। কারাগোলা হয়ে চলার পথে উল্টোদিকে দেখলেন মতিঝর্ণা, যা পাহাড় থেকে সুন্দর ভাবে নেমে আসছে। এবার এলো সকড়ি গলি। এখানে পাহাড়ের উপর পীরের দরগা দেখলেন। এরপর তেলিয়াগড়ি ফোর্ট-এর নীচ দিয়ে তেলিয়াগড়ি পাস দিয়ে স্টীমার চলল। তেলিয়াগড়ি দুর্গ সম্ভবত তৈরি করেছিলেন শেরশাহ এবং সুলতান সুজা পরে তার সংস্কার করেন, যখন তারা যথাক্রমে হুমায়ুনের ও মীরজুমলার আক্রমণ প্রতিহত করছিলেন। এই অংশটিকে অঙ্গ বলা হতো আগে। এখানকার ভূপ্রকৃতি, মানুষ, পশু সবই প্রকৃতিগতভাবে বঙ্গের থেকে পৃথক।
ক্রমে দেখা গেল পাহাড়ের সারি, যার উপর রয়েছে বর্তমান বিহারের পীর পৈতি। পীর পৈতি নামে কোন এক সাধক গঙ্গার তীরে পাহাড়ে চূড়ায় তাঁর সাধনস্থান নির্বাচন করেছিলেন। নির্মাণ হয়েছিল উপাসনার স্থল, বেদী যা বর্তমান পর্যটকদের কাছে কৌতূহলের বিষয়। মুসলমান সাধক যাঁর নামে পীর পৈতি নাম হয়েছে তাঁর সমাধি রয়েছে এখানে।
এখানকার পাথরঘাটা গুহা তার স্থাপত্যের জন্য একটি দ্রষ্টব্য স্থল। বহু পূর্বে এক রাজা নাকি গুহার মধ্যে প্রবেশ করতে গেছিলেন এক লক্ষ মশাল বাহক ও একলক্ষ মাপের তেল নিয়ে। কিন্তু কোনদিন তিনি আর ফিরে আসেননি বলে কথিত আছে। স্থানীয় মানুষের ধারণা সেই গুহাটির কোন শেষ নেই। পরে অবশ্য সেই গুহায় অভিযান চালিয়ে জানা গেছে গুহাটি ১৩৬ ফুট লম্বা আর ২৪ ফুট চওড়া। এর মধ্যে কোন স্তম্ভ নেই ছাদ ধরে রাখার জন্য।
এরপরের গন্তব্য কাহলগাঁও। একটি সুন্দর চড়ুইভাতির জায়গা। নদীর ধারে সুন্দর সুন্দর ঢিপি দেখা যায়। প্রচলিত কথায় এগুলোকে ভীমের তৈরি পান্ডবদের রান্নার উনুন বলা হয়।
আঠার মাইল উত্তরে ভাগলপুর, যা প্রাচীন অঙ্গরাজ্যের রাজধানী, প্রাচীনকালের চম্পা। এই স্থান একাদশ শতাব্দীর আগে বৌদ্ধদের এলাকা ছিল। হিউয়েন সাং এখানে কিছু বৌদ্ধ মঠের কথা লিখেছেন।
প্রচুর গাছপালা আর অস্বাস্থ্যকর নোনা মাটির কারণে মশা আর ম্যালেরিয়ায় পূর্ণ ভাগলপুরে দুটি প্রায় ৭০ ফুট লম্বা প্রাচীন মিনার আছে। কারো এখন জানা নেই মিনার দুটি কত পুরনো, কি উদ্দেশ্যে স্থাপিত ইত্যাদি বিষয়।
এরপর লেখক ভাগলপুরের ক্লিভল্যান্ড মনুমেন্ট দ্বয়ের কথা লিখেছেন। আগস্টাস ক্লিভল্যান্ড (১৭৫৪- ১৭৮৪) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বেঙ্গল প্রভিন্স-এর একজন এডমিনিস্ট্রেটর, রেভিনিউ কালেক্টর ও দেওয়ানী আদালতের জজ ছিলেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাঁর স্মৃতিতে একটি মিনার তৈরি করে দেয়। তাঁর দেশ বিরোধী মনোভাবের জন্য তাঁকে বিদ্রোহীরা হত্যা করেছিল। এটি উইকিপিডিয়া অনুসারে পাওয়া তথ্য। অপরদিকে লেখক বলেছেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তৈরি এই মিনারটি ছাড়াও ক্লিভল্যান্ড পাহাড়ি মানুষদের শিক্ষার জন্য সেখানে স্কুল স্থাপন করেছিলেন বলে দ্বিতীয় মিনারটি সেখানকার হিন্দুরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি করেছিল। এটির আকার ছিল প্যাগোডার মতো। (লেখক ও উইকিপিডিয়া থেকে পাওয়া তথ্যে ক্লিভল্যান্ড সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী তথ্য পাওয়া গেছে)।
পুরাণের মন্দার পর্বত যা সমুদ্রমন্থনের দন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল তা ভাগলপুরের দক্ষিণে অবস্থিত। আশেপাশের অন্য পাহাড়গুলি চুনা পাথরে তৈরি হলেও মন্দার গ্রানাইট পাথরে তৈরি। আগে এখানে একটি বৌদ্ধ তীর্থস্থান ছিল, পরে এই স্থানটির অধিকার পান হিন্দু শৈবরা। লেখক এবার একটি অদ্ভুত তত্ত্ব দিয়েছেন - সমুদ্র মন্থন আসলে বৌদ্ধ ও হিন্দুদের মধ্যে দ্বন্দ্বকে মূর্ত করেছে, যেখানে হিন্দু ব্রাহ্মণরা সুর এবং বৌদ্ধরা অসুর আর বাসুকি নাগ হল নাগা নামে সর্প উপাসক সম্প্রদায়।
ভাগলপুর থেকে গঙ্গার উজানে নৌকা যেতে যেতে প্রথম দর্শনীয় স্থান হলো গঙ্গার পাড়ে একাকী দাঁড়িয়ে থাকা একশ ফুট উঁচু গ্রানাইটের একটি টিলা। টিলাটির নাম জাঙ্গীরা। ডিরোজিও (ইয়ং ইন্ডিয়া নামক প্রগতিশীল দলের প্রতিষ্ঠাতা, যুক্তিবাদী, চিন্তাবিদ) তাঁর লেখা একটি কবিতায় দি ফকির অফ জাঙ্গীরায় এই স্থানের কথা পাওয়া যায়। টিলার চূড়ায় একটা পাথরের মন্দির আছে যা বহুদূর থেকে দেখা যায়। এই মন্দির শিবের নাম গৈবিনাথ।
জাঙ্গীরা থেকে ৮ মাইল দূরে সুলতানগঞ্জ। রেলপথ তৈরির কাজ করতে গিয়ে এখানে মাটি খুঁড়ে, অনেক পুরনো বাড়ির ভগ্নাবশেষ পাওয়া গেছে। সম্ভবত এখানে প্রাচীন বৌদ্ধবিহার ছিল। তার স্বপক্ষে অনেক প্রমাণ পাওয়া গেছে। (বর্তমান ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করে এখানে কোন বৌদ্ধবিহার উদ্ধার করা হয়েছে বলে পাওয়া গেল না। অর্থাৎ আর কোন খননকার্য এখানে হয়নি।) এইসব ভগ্নাবশেষ-এ যে বড় বড় আকারের ইঁট ব্যবহার করা হয়েছে তা পঞ্চম বা ষষ্ঠ শতাব্দীতে ব্যবহার হতো। হয়তো আরো পুরনো সময় হতে পারে। বুদ্ধের সাত ফুট উঁচু মূর্তি এখানে পাওয়া গেছে (বর্তমানে যেটি বার্মিংহাম মিউজিয়ামে রাখা আছে)।
সুলতানগঞ্জ থেকে জামালপুরের রেলপথে এক ঘন্টা লাগে যেতে আধা মাইল লম্বা টানেল পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
লেখক নদীপথে মুঙ্গের পর্যন্ত গেলেন কুরুকপুর হিলস (?) হয়ে। এই কুরুকপুর পাহাড়ে নাকি ঋষ্যশৃঙ্গ মুনির আশ্রম ছিল যেখানে তাঁর স্মৃতিতে প্রতিবছর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। গঙ্গার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট এক পাহাড়ে সীতাকুণ্ড নামে উষ্ণ কুণ্ড আছে। যেখানে সীতা তাঁর সতীত্ব প্রমাণ দিয়েছিলেন বলে কথিত আছে।
গঙ্গা মুঙ্গের শহরের দুই দিক ঘেঁষে বয়ে চলেছে, পটভূমিকায় আছে পাহাড়, তার মধ্যে সবুজ উপত্যকা শহর মুঙ্গের। মুঙ্গের প্রাচীন শহর, এর পুরনো নাম মৌদগলপুর।
যেদিন লেখক মুঙ্গেরে গেলেন সেদিন লর্ড ক্যানিংয়ের উত্তর প্রভিন্স যাত্রাকালীন আগমনে মুঙ্গের শহর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঘাটে লাল চাদর বিছানো হয়েছিল ভাইসরয় নামবেন বলে। সরকারি ও রেলওয়ের অফিসাররা ঘাটে অপেক্ষা করছেন। ভাইসরয় তাঁর বজরা থেকে নামতে সালাম, অভিবাদনে তাঁকে স্বাগত জানানো হলো।
মুঙ্গেরে প্রাচীন বাড়ি বা ভগ্নস্তুপ কিছু নেই কেল্লাটি ছাড়া। উঁচু জমির ওপর চার হাজার ফুট লম্বা সাড়ে তিন হাজার ফুট চওড়া দুর্গটি দাঁড়িয়ে আছে। তার তিনদিক প্রাচীর বেষ্টিত, পরিখা দিয়ে ঘেরা, চতুর্থ দিকে রয়েছে গঙ্গা। কেল্লার চারটি দরজা, প্রধান দরজার নাম লাল দরজা। পূর্ব দিকে দরজার পাশে স্তম্ভে কিছু ছোট ছোট বৌদ্ধ কারুকাজ দেখে লেখক বুঝলেন যে এগুলি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দিরের অংশ ছিল। কেল্লার মধ্যে কালো মার্বেল পাথরের একটি সুন্দর মসজিদ আছে। সুলতান সুজার (শাহজাহানের পুত্র) মসজিদটি সংস্কার করে টমাস অ্যান্ড কোং-এর দোকান হয়েছে। লেখক একটি পুরনো বিশাল কুয়ো এবং বেগমদের নদীতে যাওয়ার ভগ্ন সুড়ঙ্গপথ দেখলেন।
মুঙ্গের শহরের রাস্তাঘাট ভালো, জনসংখ্যা মাঝারি। মিলিটারি অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগিরা এখানে অনেক আছে। এখানকার বাড়ি ছোট ছোট কিন্তু বাংলার মতো একতলা টালির ঢালু ছাদের বাড়ি নয়। এখানকার বাড়িগুলি দোতলা আর ছাদের গঠন সমতল। এখানে লোহার নানারকম দ্রব্য তৈরি ও বিক্রি হয়। মুঙ্গেরের এক জনশূন্য স্থানে চন্ডী মাতার মন্দির আছে (চন্ডিকা স্থান, এটি একটি শক্তিপীঠ)।
নদীপথে এরপর সুরজগড়, বার, ফতুয়া ইত্যাদি জায়গা আসে। এইসব স্থানে কৃষি কাজ খুব ভালো হয়। নানা রকম ফলের গাছে সাজানো এই জায়গাগুলি অত্যন্ত নয়নাভিরাম। এখানে মরা বটগাছের ফাঁপা গুড়ির মধ্যে তালগাছ লাগানোর এক অভিনব উপায় দেখলেন লেখক। বিকেলে যখন গঙ্গার জল অস্তমিত সূর্যের আলোতে লাল তখন তাঁরা পাটনা এসে পৌঁছালেন।
(চলছে)
প্রিয় পাঠক: আপনার মতামত আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ! অনুগ্রহ করে একটি মন্তব্য করুন এবং এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার চিন্তাভাবনা শেয়ার করুন। আমি আপনার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য আগ্রহী!
অনেক অজানা স্থানের সম্পর্কে জানলাম
উত্তরমুছুনশিউলি
🙏❤️
উত্তরমুছুন